নিজস্ব প্রতিবেদক.
রাজবাড়ীর সদর হাসপাতালে টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া ভীড় সৃষ্টি হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিধি না মেনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় লাইনে। ফলে এখান থেকেই করোনা সংক্রমনের ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
বেলা ১১টার দিকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের ভিরে হাসপাতালে পা ফেলানোর জায়গা নেই। টিকা দানের কক্ষের সামনে থেকে টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের লাইন শুরু হয়েছে। ছাত্র ও ছাত্রীদের দুটি লাইন করা হয়েছে। টিকা দানের কক্ষের সামনে থেকে শুরু হওয়া লাইন, সার্জারী ওয়ার্ড পুরুষ ও নারী ওয়ার্ডের সামনে দিয়ে, বর্হিঃবিভাগের টিকিট কাউন্টার পার হয়ে, জরুরী বিভাগের সামনে দিয়ে হাসপাতাল ভবনের বাইরে চলে এসেছে। টিকা নিতে আসা অধিকাংশ শিক্ষার্থীর মুখে কোন মাস্ক নেই। একজন আরেক জনের গায়ের সাথে গা লাগিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। অনেকেই দুষ্টুমী করে পেছন থেকে ধাক্কা দিচ্ছে। কয়েকজন পুলিশ সদস্য এসব শিক্ষার্থীদের শাস্ত থাকার পরামর্শ দিচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের এমন ভিরে সাধারণ রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অনেকেই টিকিট কেটে ভিরের কারনে ডাক্তার দেখাতে পারছে না।
বারট ভাকলাা উচ্ছ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী হোসনে আরা বলেন, দুই ঘন্টার বেশি সময় লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছি। সকাল থেকেই অনেক ভির। এত মানুষের মধ্যে মাস্ক পড়ে থাকলে দম বন্ধ হয়ে আসে। এজন্য মাস্ক খুলে রেখেছি।
আটদাপুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিফাত হোসেন বলেন, লাইনে দাঁড়িয়ে আছি কিন্তু মাঝে মধ্যেই পেছন থেকে অনেক জোরে ধাক্কা দিচ্ছে। তখন মনে হয় চাপ্টা হয়ে গেলাম। কখন টিকা পাব জানি না।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর থেকে আসা শামসুল আলম বলেন, টিকিট কেটেছি ডাক্তার দেখানোর জন্য। কিন্তু হাসপাতালের ভেতরে ঢোকার মত কোন অবস্থা নেই এত ভির। স্কুলের ছেলেদের যদি অন্য কোথাও টিকা দিত তাহলে অন্য রোগীদের জন্য সুবিধা হত।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে টিকা কেন্দ্রে দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স আবদুল্লাহ আল মামুন হোসেন বলেন. আজ আমরা তিন হাজার আটশ শিক্ষার্থীদের মাঝে টিকা দিয়েছি। আসলে শিক্ষা অফিস ঠিক করে কোন দিন কোন কোন বিদ্যালয়ের কতজন শিক্ষার্থী টিকা নিবে। এখানে আমাদের টিকা দেবার দায়িত্ব শুধু।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, আমাদের জানানো হয়েছে যে আগাী ১৫ জানুয়ারীর মধ্যে জেলার সকল ১২ বছরের বেশি বয়সি শিক্ষার্থীদের টিকা দিয়ে শেষ করতে হবে। সেই অনুযায়ী আমরা বিদ্যালয়ের তালিকা করেছি। ভির হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অধিকাংশ শিক্ষার্থীর সাথে একজন করে অভিভাবক এসেছে। এখন একটা হাসপাতালে তিন হাজার শিক্ষার্থীর সাথে আরো দুই হাজার অভিভাবক আসলে ভিরতো হবেই।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) এস এম শাহাদাত মিরাজ বলেন, শিক্ষার্থীদের অনেক চাপ থাকায় হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যাঘাত হচ্ছে। অনেক রোগী স্বাভাবিক ভাবে যাতায়াত করতে পারছে না। বিষয়টি সিভিল সার্জন মহোদয়কে অবগত করা হয়েছে।
Leave a Reply