নিজস্ব প্রতিবেদক
গুলিতে নিহত আওয়ামীলীগের নেতা হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী শেফালী আক্তার বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও চার-পাঁচজনকে আসামী করে শনিবার দিবাগত রাতে ১২টা ২৫ মিনিটে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
আওয়ামীলীগের নেতার নাম আবদুল লতিফ মিয়া (৫৭)। তিনি বানিবহ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি। চতুর্থধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় চেয়ারম্যান পদের প্রত্যাশী ছিলেন। তাঁর বাড়ি মহিষবাথান গ্রামের পুকুরচালা এলাকায়।
জানা যায়, নিহত আবদুল লতিফ মিয়া আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। এলাকায় তাঁর জনপ্রিয়তার কারণে মাঝেমধ্যেই হত্যার হুমকি দেওয়া হতো। তিনি নিরাপত্তার জন্য মোহাম্মদ আলীর মেয়ের জামাত মেহেদী হাসানসহ কিছু ব্যক্তি সঙ্গে নিয়ে চলাফেরা করতেন। ১১ নভেম্বর তিনি নির্বাচনী কার্যক্রম সম্পন্ন করে রাত ১১.৫০ মিনিটে বানিবহ বাজার থেকে মোটরবাইকে মেহেদী হাসানের সঙ্গে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তিনি রওনা দেওয়ার পর বিদ্যুৎ চলে যায়। তিনি মেহেদী হাসানকে নামিয়ে দেওয়ার পরেই আগে থেকে ওতপেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তাঁর ওপর হামলা চালায়। এসময় সামনে থেকে তাকে সামনে থেকে দুটি গুলি করা হয়। তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে এগুতে থাকলে পিছন থেকে আরও তিনটি গুলি করা হয়। এতে করে আবদুল লতিফ মাটিতে পড়ে গিয়ে চিৎকার করতে থাকেন। এসময় হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ও রাতেই ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। পথে তিনি হামলাকারীদের নাম বলেছেন যা মোবাইল ফোনে রেকর্ড করা আছে। ভোর ৪টার দিকে মানিকগঞ্জের মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আওয়ামীলীগের নেতা ও বানিবহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ গোলাম মোস্তাফা বলেন, এবার আবদুল লতিফ দলীয়ভাবে চেয়ারম্যান পদপ্রত্যাশী ছিলেন। স্থানীয় ভাবে তিনি জনপ্রিয় ছিলেন। ইউনিয়ন থেকে পাঠানো তালিকায় তাঁর নাম এক নম্বরে ছিল। নির্বাচন সামনে রেখে লতিফ ব্যাপক আকারে গণসংযোগ করছিলেন। প্রতিপক্ষরা এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।
রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, শনিবার দিবাগত রাত ১২.২৫ মিনিটে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এজাহারে উল্লেখ থাকা প্রধান আসামী মোর্শেদসহ মোট পাঁচজনকে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে করা হয়েছে। অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য একাধিক পুলিশদল মাঠে তৎপর আছে। গ্রেপ্তার হওয়া আসামীদের সোমবার বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply