তবে এ নিয়েও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও রাজনৈতিক সংকট সমাধানে সরকারি দলের সঙ্গে সমঝোতা নিয়ে আলোচনায় দলের বেশ কয়েকজন নেতার সম্মতি থাকলেও বাঁধা দিয়েছেন অনেকেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক সিনিয়র নেতা জানান, ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করার মতো নেতাকর্মী বিএনপিতেই নেই। আর সরকারবিরোধী অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রায়ই প্রকাশ্যে বিএনপির সমালোচনা করে। জাতীয় ঐক্যের জন্য তাদেরকেই যদি আমন্ত্রণ জানাতে হয়, তাহলে বিএনপি নেতাদের হাসির পাত্র হতে হবে।
দলের স্থায়ী কমিটির এক সদস্য জানান, অতীতে বিএনপি শুধু ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বৈঠক করে আন্দোলনের রূপরেখা ঠিক করতো। কিন্তু এখন থেকে আন্দোলন এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের ইস্যুতে সব রাজনৈতিক দল ও বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করবে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা ধারাবাহিকভাবে এ বৈঠক করবেন।
এদিকে পরিচয় গোপন রেখে দলের একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, চৌদ্দ জায়গায় ধরনা দিয়ে ঐক্য করার আগে বিএনপিকে নিজেদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে থাকতে হবে। খালি জুম মিটিং করে যদি নেতা হওয়া যেতো, তাহলে দেশে নেতার আকাল থাকত না। গত নির্বাচনের আগে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে যে ‘তামাশার দলে’ পরিণত হয়েছিল বিএনপি, সেখান থেকেও শিক্ষা নেয়নি দায়িত্বশীল শীর্ষ নেতারা।
তিনি আরো বলেন, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে জাতীয় ঐক্য গঠনের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ রয়েছে অনেক সিনিয়র নেতার। তারেক রহমানের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কিছু বলতে না পারলেও ভেতরে ভেতরে অনেক নেতাই দল ছাড়ার চিন্তা করছে।
এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বুদ্ধিজীবীরা বলেন, বিএনপি নিজেদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ না হয়ে যদি আবারো ঐক্য করতে যায় তাহলে দল হিসেবে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা হারাবে। কারণ সবাই জানে বিএনপির নিজের মধ্যেই ঐক্য নেই। বিশিষ্ট নাগরিকরা বিএনপি ডাকে সারা দেবেন না। কারণ তারা বুঝে গেছে বিএনপির রাজনৈতিক নীতি ও কৌশল খুবই অপরিপক্ক। এ কারণেই উপায়ন্ত না পেয়ে বিএনপির উচিত সরকারের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করা।
Leave a Reply