রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে গতকাল শুক্রবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) উদ্যোগে একটি বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এঘটনায় কনের খালাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার আগে বিয়ে না দেওয়ার মুচলেকা নেওয়া হয়েছে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের সারুটিয়া গ্রামে একটি বাড়িতে বিয়ের আয়োজন করা হয়। কনের বয়স (১৫)। সে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার মা মারা গেছে। বাবা আরেকটি বিয়ে করেছে। শিশুটি নানাবাড়িতে থেকে পড়ালেখা করে। শিক্ষার্থী হিসেবে মেধাবী। তার শ্রেণি রোল নম্বর ১। তার বিয়ের আয়োজন করা হয়। পাত্র পাশের উপজেলা মধুখালীতে একটি বেসরকারি কোম্পানীতে চাকুরি করেন। কনের বাড়িতে বিয়ে উপলক্ষে সকাল থেকেই রান্নাবান্না করা হয়। সামিয়ানা টাঙানো হয়। সাউন্ড বক্সে গান-বাজনা চলতে থাকে। বিষয়টি জানতে পেরে অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। ইউএনও আম্বিয়া সুলতানা, ইসলামপুর ইউপির চেয়ারম্যান আহমদ আলী, পুলিশ ও আনসার নিয়ে হাজির হন বিয়ে বাড়িতে। তবে ইউএনও’র আসার খবর শুনে সব লুকিয়ে ফেলা হয়। কনে ও কনের বাবা পাশের বাড়িতে পালিয়ে যান। এরপর কনের খালার বাড়িতে গিয়ে তাকে আটক করা হয়। এসময় পাত্রীর সন্ধান পাওয়া যায়। বাল্যবিবাহে সহযোগিতা করার জন্য কনের খালাকে (রুপালী বেগম) পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া ওই শিক্ষার্থী প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তাকে বিয়ে দেবে না বলে মুচলেকা দেওয়া হয়েছে।
বাল্যবিবাহ বন্ধ করার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আম্বিয়া সুলতানা। তিনি বলেন, বাল্যবিবাহ দেওয়া বেআইনী। এতে অসংখ্য মেধাবী শিশুর জীবন ধংস হয়ে যায়। বাল্যবিবাহের খবর পেয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। কিন্ত বিয়ে বাড়িতে কনেকে পাওয়া যাচ্ছিলো না। তারা একাধিক বাড়িতে লুকিয়ে ছিল। পরে তার খালাকে আটক করলে কনে হাজির হয়। সে শিক্ষার্থী হিসেবে মেধাবী। এসময় পরিবারের সদস্যদের বাল্যবিবাহের কুফল তুলে ধরা হয়।
Leave a Reply