নিজস্ব প্রতিবেদক..
রাজবাড়ী শহরের এক নম্বর বেড়াডাঙ্গায় সংঘর্ষের ঘটনায় সদর থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে মামলার এজাহারভূক্ত দুই আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে। বুধবার দুপুরে এই সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে।
গ্রেপ্তার দুই ব্যক্তি হলো এস এম রানা(৩৫) ও মোর্শেদ আলম মালেক (৩৫)। রানা এক নম্বর বেড়াডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা। তিনি সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলার বাদী ও ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি নাহিদুল আলম রাজুর ভাই। মালেকের বাড়ি এক নম্বর রেলপাড়ায়। তিনি লাখোকণ্ঠ নামে একটি পত্রিকার রাজবাড়ী প্রতিনিধি।
থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুরে আধিপাত্য বিস্তার কেন্দ্র করে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি নাহিদুল আলম ওরফে রাজু ও ঠিকাদার ফরহাদ হোসেন ওরফে বাপ্পীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। বাক্-বিতন্ডার এক পর্যায়ে সংঘর্ষ হয়। গুলি ছোঁড়া হয়। প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বাপ্পী ও সজীব কুমার শিকদার নামে দুইজনকে কুপিয়ে জখম হয়। তাদের প্রথমে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়ার পরে বাপ্পীকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বাপ্পী ও সজীব সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন।
ওইদিন সন্ধ্যায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতার ওপর হামলার প্রতিবাদে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এতে ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করে। তাঁরা বাপ্পীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এঘটনায় থানায় দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। বাপ্পীর মা বেবি হাসানের মামলায় নাহিদুল আলম রাজুকে প্রধান আসামী করে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞতনামা ১০-১৫জনকে আসামি করা হয়। পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে এসএম রানা ও মোর্শেদ আলম মালেক নামে এজাহারভূক্ত দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
অপর মামলার বাদী এস এম রানা। তিনি সজীব শিকদারকে প্রধান আসামী করে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতদের আসামী করেন।
এসএম রানা এজাহারে উল্লেখ করেন, তাঁর ভাই রাজু এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী না করার জন্য বাপ্পীকে নিষেধ করতেন। এতে প্রায়ই রাজুকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হতো। বুধবার দুপুরে বেড়াডাঙ্গা জামে মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে বের হওয়ার পর রাজুকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে মারধর এবং এক পর্যায়ে রাজুকে উদ্দেশ্য করে তিন রাউন্ড গুলি ছোঁড়া হয়। কিন্তু গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
বাপ্পীর মা বেবি হাসানের মামলায় বলা হয়, আসামীদের মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে ফরহাদ হোসেন বাপ্পী বাধা প্রদান করতো। এজন্য বাপ্পীকে হত্যা করার জন্য পরিকল্পনা করে আসছিল। বাপ্পী ও তার বন্ধু সজিব শিকদার ১৭ আগস্ট দুপুর দেড়টার দিকে বাপ্পীর অফিসে বসা ছিল। এসময় বাপ্পীর অফিসে প্রবেশ করে মারধর ও কুপিয়ে জখম করা হয়। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি ছোঁড়া হয়।
মোর্শেদ আলম মালেক বলেন, আমি সংবাদকর্মী। আমি সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো ভাবেই জড়িত নই। রাতে আমাকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সংঘর্ষে জড়িত থাকলে আমি লুকিয়ে থাকতাম। বাড়িতে থাকতাম না।
রাজবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামীরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হয়েছে।
Leave a Reply