নিজস্ব প্রতিবেদক
মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে একে একে চারবার। আরও একবার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়। রাজবাড়ী শহরের পৌর এলাকায় চার কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ পাঁচ বছরেও সম্পন্ন হয়নি। ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করতে হচ্ছে।
রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথমান ও প্রশ্বস্ততা উন্নীতকরণ প্রকল্পের (গোপালগঞ্জ অঞ্চল) আওতায় রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজের দরপত্র আহŸান করা হয়। পৌরসভার চার কিলোমিটার সড়ক হবে চার লেনবিশিষ্ট। রাস্তার মাঝখানে চার ফিটের একটি সড়ক বিভাজক থাকবে। আর উভয়পাশে রাস্তা থাকবে ২৯ ফিট করে। শ্রীপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে চরল²ীপুর আহমদ আলী মৃধা কলেজ এলাকা পর্যন্ত চার লেনের কাজের দায়িত্ব পেয়েছে যৌথভাবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্পেকটা ইনঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড ও ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন। ২০১৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর কার্যাদেশ দেওয়া হয়। চুক্তি অনুযায়ি ২০১৯ সালের ২৬ জুন কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। এছাড়া রাস্তার দুইপাশে ড্রেন নির্মাণ করা হবে। কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০ কোটি টাকা।
বড়পুল এলাকার বাসিন্দা অভিজিৎ কুমার সোম বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম সড়ক। কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় স্থানীয়দের ধূলাবালির মধ্যে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একলেন দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে বেশি ঝুঁকি নিয়ে হয়। কিন্তু এই ভাবে কাজ ফেলে রাখার কারন জানি না।
যানবাহনের কয়েকজন চালক ও মোটর বাইক আরোহী বলেন, প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তার একপাশে কাজ করা হয়নি। এই পাশ পাকা পাশের তুলনায় অনেক নিচু। বিশেষ করে নতুন বাজার থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত। রাস্তার শুধু মাটি থাকায় খুব ধূলাবালি উড়ে। আবার নিচু হওয়ায় যানবাহন নিচে নামানো যায়না। এভাবে যাতায়াত করতে খুব সমস্যা হয়। আগে যখন রাস্তায় খানাখন্দ ছিল তখন এ রকম ভোগান্তি পোহাতে হতো। আর এখন অন্যরকম ভোগান্তি।
সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের শ্রীপুর বাস টার্মিনাল থেকে বড়পুল মোড় পর্যন্ত উভয়পাশে রাস্তার মূল কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বড়পুল কাজী হেদায়েত হোসেন স্টেডিয়াম থেকে চরল²ীপুর পর্যন্ত রাস্তার একপাশ (কুষ্টিয়া যাওয়ার সময় হাতের বামদিক) পাকা করা হয়েছে। চরল²ীপুরের তালতলা এলাকায় ড্রেনের কাজ শুরু হয়েছে। খননযন্ত্র দিয়ে রাস্তা খোঁড়া হচ্ছে। কিন্তু কিছু দুর-দুর রাস্তা বা ড্রেনের মাঝখানে বিদ্যুতের খুঁটি দাঁড়িয়ে রয়েছে। খুঁটিগুলোর আগে ও পরে ড্রেন তৈরি করা হচ্ছে। পুলিশ লাইন্স মোড় এলাকায় রাস্তা এবড়ো থেবড়ো হয়ে আছে। রাস্তার কালোপিচ উঁচু হয়ে ঢিবির মতো হয়ে আছে।
স্পেকটা ইনঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড ও ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন স্থানীয় প্রতিনিধি আওয়ামীলীগের নেতা আমজাদ হোসেন বলেন, রাস্তার দুই পাশে ড্রেন তৈরি করতে সমস্যা হচ্ছিল। এ কারণে কাজ করতে কিছু দেরি হয়েছে। তবে আশা করছি এবার মে মাসের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে পারবো।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নওয়াজিস রহমান বলেন, ইতিমধ্যে শতকার ৭৪ ভাগ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।এখন পর্যন্ত কাজের মেয়াদ চারবার বাড়ানো হয়েছে। সবশেষ মেয়াদ ছিল ৩১ মার্চ পর্যন্ত। আমি ফেব্রæয়ারি মাসে যোগদান করেছি। একারণে কাজ সম্পন্ন হতে এতো দেরি হওয়ার কারণ বলতে পারছি না। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জুন মাস পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেছে।
তিনি বলেন, নভেম্বর মাস থেকে রাস্তার কাজ বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রড সিমেন্টের দাম বাড়ার কারণ দেখিয়ে ছিল। তারা কাজ করার জন্য বিভিন্ন উপকরণ ক্রয় করছে। কিছু দিনের মধ্যে আবার কাজ শুরু করার কথা রয়েছে।
সাংসদ কাজী কেরামত আলী বলেন, কাজের মূল ঠিকাদার এখানে তেমন একটা আসে না। স্থানীয়ভাবে কাজ করা হয়। তাদের অনেকবার বলেছি। কারণ মানুষের দুর্ভোগের সীমা নেই। ঢিমেতালে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা হচ্ছে। মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছে। আমরাও এদের দ্রæত কাজ সম্পন্ন করতে বলছি। কিন্তু কাজ তো সম্পন্ন করা হচ্ছে না।
Leave a Reply