নিজস্ব প্রতিবেদক
২৩ মার্চ, বুধবার সকালে পাংশা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। রাজবাড়ীর পাংশা সরকারি কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী সাজিদুর রহমান ওরফে সিফাত হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবিতে এসব কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সিফাত পাংশা সরকারি কলেজের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর বাড়ি পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের কাচারীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বাবার নাম রফিকুল ইসলাম।
কর্মসূচির শুরুতে সকাল ১১টায় পাংশা সরকারি কলেজ চত্বরে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়। সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এসময় ‘আমার ভাই কবরে খুনি কেন বাইরে, সিফাত হত্যার বিচার চাই করতে হবে করতে হবে, সিফাতের খুনিদের ফাঁসি চাই দিতে হবে, পাংশার মাটিতে খুনিদের ঠাঁই নেই’ প্রভৃতি ¯েøাগান দেওয়া হয়। মিছিলটি পাংশা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কালিবাড়ী মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা মিলিত হয়।
সমাবেশ চলাকালে বক্তব্য দেন নিহত সাজিদুরের বাবা রফিকুল ইসলাম, মামা শফিকুল ইসলাম, পাংশা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের নেতা শেখ সুজন প্রমূখ। এসময় সাজিদুরের মা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সমাবেশ শেষে আবারও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি পাংশা সরকারি কলেজে এসে শেষ হয়।
বক্তারা হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। তাঁরা বলেন, সাজিদুর ছিল একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। ছবি তুলতে খুব ভালবাসতো। ফটোগ্রাফীর ওপর তাঁর উচ্চ শিক্ষাগ্রহণের স্বপ্ন ছিল। কিন্তু অকালে তাকে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হয়েছে। একজন তরুণের স্বপ্ন অশালে মারা গেছে। এশটি পরিবারের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়েছে। আর যেন কোনো মায়ের কোল খালী না হয়। আর কোনো বাবাকে সন্তানের লাশ বহন করতে না হয়।
সাজিদুরের বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা সন্তান হারিয়েছি। সন্তান হারানোর কষ্ট আমরা বুঝতে পারছি। আর যেন কোনো মা সন্তান হারা না হয়। পিতাকে অসহায় হতে না হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) ফয়সাল মুন্সী বলেন, মামলার বিষয়টি তদন্তাধীন হওয়ায় এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করা যাচ্ছে না। মামলার এজাহারভূক্ত কিছু আসামীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। গতকাল এজাহারভূক্ত ১৩ নম্বর আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালত তাঁর একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
২০২১ সালে ১১ জানুয়ারি রাতে সাজিদুর ও স্বপন মোটর সাইকেল চালিয়ে চরঝিকড়ী থেকে ব্যাড মিন্টন ফাইনাল খেলা দেখে বাড়ি ফিরছিল। কাচারীপাড়া বড় মসজিদ এলাকায় আগে থেকেই ওৎ পেতে থাকা একদল সন্ত্রাসী রাস্তার উপর গাছের গুড়ি ফেলে পথ রোধ করে হামলা চালায়। পরের দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাজিদুর মারা যায়। এ ঘটনায় ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে সিফাতের মা বাদী হয়ে পাংশা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পাংশা থানা পুলিশ ২১জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করে। চার্জশীটে নাজারী প্রদান করায় পিবিআআইকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করে।
Leave a Reply