একদিকে বাতাসে বহিছে প্রেম আরেক দিকে নয়নে লাগিলো নেশা। কমলা, হলুদ, আর লালের ছড়াছড়ি দেখতে ভালোই লাগে।
আজ দুইটা সালিস ছিলো। দুইটাই লাভ ম্যারেজ। কেস নাম্বার ২. – ছেলে রাজমিস্ত্রী। মেয়ে এইবার এইস.এস. সি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। বিয়ে হয়েছে একবছর। এরই মধ্যে ছেলে মারধর করে। আমি বললাম আজ ভ্যালেন্টাইন্স ডে। যাও অকালে প্রেম করে বিয়ে করো।
কেস নাম্বার ১. ছেলে এবং মেয়ে উভয়েরই দ্বিতীয় বিয়ে৷ ফেইসবুকে পরিচয়। পাঁচবছর প্রেমের পরে বিয়ে।
আমরা রীতিমতো বিরক্ত ছেলের অ্যারোগেন্সিতে আর তর্কে। সবার সামনেই তুই তোকারি করতে লাগলো। ছেলের পক্ষের লোকেরাও মহা বিরক্ত ছেলের আচরণে। তারা উঠে চলেই যাচ্ছিলো। মেয়েও কম যায় না। প্রতিটা কথায়ই বিরোধিতা আর তর্ক। থামানোই যায় না। আমরাও বলছিলাম এই সালিশ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। না পোষালে তো ডিভোর্সের বিধান রয়েইছে। মেয়ে সংসার করবে৷ কিন্তু সব তার ইচ্ছা মতো হতে হবে৷ ছেলের আগের বউও ছেলেকে মারে এই বউও মেন্টাল টর্চার করে আবার মেয়েও বলে যে তাকে খুব নির্যাতন করে, ভরণ পোষণ দেয় না। একটা বাচ্চা হয়েছে তাদের।
আর ছেলের আগের পক্ষের চার বাচ্চা। এইটা দিয়ে পাঁচটা। মেয়েরও আগের পক্ষের এক মেয়ে। বড় বউ চাপ দিয়ে বাড়ি, জমি সব তার ছেলে মেয়ের নামে লিখে নিয়েছে। ছোট বউকেও ছেলে জমি লিখে দিয়েছে। এখন বাড়ি করে দেবে। কিন্তু মেয়ে শহর ছেড়ে গ্রামে যাবে না আর টিনের বাড়িতেও থাকবে না। সে বড় বউয়ের বাড়িতেই গিয়ে উঠবে। কারণ ওই বাড়ি দ্বোতলা, টাইলস করা। ছেলে দাবী করলো এইচএসসি থেকে এই ল পড়ার খরচ সবই সে দিয়েছে৷ মেয়ে সরকারি কলেজে কম্পিউটার অপারেটরের কাজ করে আর ল পড়ে যদিও তার চাকরী পার্মানেন্ট না। তবুও তার যাহোক একটা আর্নিং সোর্স আছে। উপরন্তু তার আগের পক্ষের মেয়ের খরচ নাকি তার আগের স্বামীই দেয়। আবার এই স্বামী হিসাবের খাতা নিয়ে এসেছে কবে কি কিনে দিয়েছে কয় টাকা দিয়েছে তাতে সব লেখা। মেয়ে বলে ঠিকমতো খরচ দেয় না, বাবার বাড়ি ফেলে রেখেছে। বাবা ক্যান্সারে মারা গেছে মা ও অসুস্থ। ঘর দিয়ে পানি পড়ে। এই স্বামী অটো চালায়। বাবা হাই স্কুলের শিক্ষক ছিলো, কিন্তু ছেলে পড়াশোনা করে নাই। আমি ভাবছিলাম এই ছেলে দুই নৌকায় পা দিয়ে এমন বিপদে আছে যে তার রীতিমতো মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে যাচ্ছে। মেয়েও বলে সুইসাইড করবে। এখন ভুল তোমরা করেছ তোমাদের তো এভাবেই থাকতে হবে ছাড় দিয়ে। আর না পোষালে ডিভোর্স। কিন্তু মেয়ে কোন ছাড় দেবে না। আমি তাকিয়ে ছিলাম পাঁচ বছরের বাচ্চা মেয়েটার দিকে। তার মা বলছে সে মেয়ের দায়িত্ব নেবে না। ঘর দিয়ে পানি পড়ে, সারাদিন সে চাকরীতে থাকে, তার মা এবং সে অসুস্থ। বাচ্চাটা বাবার কাছে যেয়ে সাতদিন ছিলো। সেখানে তার সৎ মা।
মনে মনে বলছিলাম হ্যাপি ভালেন্টাইন্স ডে। দুটোই প্রেমের বিয়ে।
আচ্ছা আমরা যারা সালিশ করি তাদের জীবনেও তো কত সমস্যা! তারা কার কাছে যাই? তারা নিজের কাছে যাই। সমস্যা ছাড়া কোন মানুষ আছে
কৃতজ্ঞতা. শায়লা তাবাসসুম নেওয়াজ
Leave a Reply