1. admin@dailyrajbarinews.com : dailyrajbarinews :
  2. akmolbangladesh@gmail.com : Sheikh Faysal : Sheikh Faysal
April 1, 2023, 4:58 am

ইউক্রেন ও রাশিয়া যুদ্ধ এবং ………………

  • সর্বশেষ আপডেট Saturday, February 26, 2022
  • 184 মোট ভিউ

ক) ইউক্রেন কার?

যুদ্ধের পূর্বে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের ৫টি ভাষ্যঃ-
যে কথাটি সবচেয়ে বেশি আলোড়ন তুলেছে তা হলো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন –
১) ইউক্রেন কোন দিনই প্রকৃত অর্থে একটা রাষ্ট্র ছিল না।
২) এখন যা ইউক্রেন তা আসলে ‘প্রাচীন রুশ ভূখণ্ড।’
৩) আধুনিক যুগের এই ইউক্রেন আসলে সম্পূর্ণ বলশেভিক কমিউনিস্ট রাশিয়ার সৃষ্টি। তাই ইউক্রেন কোন রাষ্ট্রই নয়।
৪) ১৯১৭ সালের বিপ্লবের পর এ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল এবং লেনিন ও তার সহযোগীরা রাশিয়ার ঐতিহাসিক ভূখণ্ডকে ভাগ করে ছিঁড়েখুঁড়ে নিয়ে সবচেয়ে খারাপভাবে এ কাজটা করেছিলেন”।
৫) ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়ার সময় মিখাইল গর্বাচেভের দুর্বল সরকারের কারণেই ইউক্রেন স্বাধীন হবার সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল।

খ) ইউক্রেন নিয়ে ইতিহাস কী বলে?
১) প্রকৃতপক্ষে রাশিয়া ও ইউক্রেনের ইতিহাস বহু শতাব্দী ধরেই এক সাথে জড়িয়ে আছে এবং সেই ইতিহাস অত্যন্ত জটিল।
২) রাশিয়া ও ইউক্রেন – উভয়েরই প্রধান ধর্ম অর্থোডক্স খ্রিস্টান। তাদের ভাষা, সংস্কৃতি এবং খাদ্য – এগুলো একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত।
৩) ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ অতি প্রাচীন শহর, এবং রুস জনগোষ্ঠীর একসময়ের রাজধানী। এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল রাশিয়ার বর্তমান রাজধানী মস্কোর চেয়েও কয়েক শতাব্দী আগে ।

গ) কিয়েভ কার? ইউক্রেন না রাশিয়ার?

১) মধ্য যুগে নবম শতাব্দীতে স্লাভ জনগোষ্ঠীরা এক সাম্রাজ্য গঠন করে যার নাম ‘কিয়েভান রুস। যা প্রথম রাষ্ট্রের ইতিহাস।ইউক্রেন, বেলারুস এবং রাশিয়ার অংশ নিয়ে গঠিত হয়েছিল এই কিয়েভান রুস।
২) কিয়েভান রুস” কথাটির সরল অর্থ হলো “কিয়েভের রুসদের আবাসভূমি।”

৩ )রুশ জাতির আদি উৎস নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতভেদ আছে, কেউ বলেন – রুশদের আদি পূর্বপুরুষরা ছিল সুইডেনের, আবার আরেক দল ইতিহাসবিদ মনে করেন এটা ঠিক নয়, রুশরা হচ্ছে স্লাভ জনগোষ্ঠীর বংশধর।

ঘ) উত্থানপতনের কিয়েভের ইতিহাসঃ-
১) ইউক্রেনের ভূ-প্রকৃতিরও আছে অনেক বৈচিত্র্য। এখানে আছে কৃষিজমি, বনভূমি আর কৃষ্ণসাগর হয়ে নৌচলাচলের পথ।
২) নবম-দশম শতাব্দীতে অনেকগুলো প্রাচীন বাণিজ্যিক পণ্য চলাচলের পথ গড়ে উঠেছিল কিয়েভে। তাই বিভিন্ন সময় বহু যোদ্ধা জনগোষ্ঠীর দখলে ছিল এই এলাকাটি।

৪) এটাও ঠিক যে আধুনিক ইউক্রেনের কিছু অংশ বহু শতাব্দী ধরে রুশ সাম্রাজ্যের অংশ ছিল।

৫) কিন্তু ইউক্রেনের অন্য কিছু অঞ্চল আবার বিভিন্ন সময় অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্য, পোল্যান্ড বা লিথুয়ানিয়ারও অংশ ছিল। ইউক্রেনের ভূখণ্ড অটোমান তুর্কদেরও দখলে ছিল কিছু সময়ের জন্য।

ঙ) ইউক্রেন হলো ছোট ভাইঃ-
ইউক্রেনকে অনেক রুশই দেখে থাকেন তাদের জাতির “ছোট ভাই” হিসেবে, এবং মনে করেন ইউক্রেনীয়দের আচরণও সেরকমই হওয়া উচিত।

চ) ইউক্রেন স্বাধীন রাষ্ট্রের চেষ্টাঃ-
সেন্ট পিটার্সবুর্গে ১৯১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যে বলশেভিক বিপ্লব হয় – তার পর ক্রাইমিয়াসহ ইউক্রেনের এক বড় অংশ রাশিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীন ইউক্রেন প্রজাতন্ত্র গঠনের কয়েকটি চেষ্টা করে । ১৯১৭ থেকে ১৯২০ সালের মধ্যে এক যুদ্ধবিক্ষুব্ধ এবং চরম বিশৃঙ্খল সময়ে সেই স্বাধীন ইউক্রেন গঠনের চেষ্টা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারেনি।

লেনিনের নেতৃত্বাধীন সোভিয়েত সরকার স্বাধীন ইউক্রেন গঠনের চেষ্টাকে দমন করে।

ইউক্রেনের বেশির ভাগ ভূখণ্ডই সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। অন্যদিকে পশ্চিম ইউক্রেনের কিছু অংশ পোল্যান্ড, চেকোশ্লোভাকিয়া আর রোমানিয়ার মধ্যে ভাগাভাগি করা হয়।

সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ হিসেবে ইউক্রেনের নাম হয় ইউক্রেনিয়ান সোভিয়েত সোশালিস্ট রিপাবলিক।

ছ) ইউক্রেনের জন্মঃ-
অবশেষে সাত দশকেরও বেশি সময় পর সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাবার মধ্যে দিয়ে ১৯৯১ সালে জন্ম হয় স্বাধীন ইউক্রেন রাষ্ট্রের।

ইউক্রেন আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করে আগস্ট মাসে, আর সে বছরের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত এক গণভোটে সেদেশের জনগণ বিপুলভাবে এর পক্ষে রায়

বলা যায়, আজকের ইউক্রেনের মানচিত্র তৈরি হয়েছে রুশ বিপ্লব এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়েই ।

জ) কিসের জন্য ইউক্রেন ও রাশিয়ার এতো বৈরিতাঃ-
পূর্ব ইউক্রেনে বহু রুশভাষী এবং মস্কোর প্রতি অনুগত লোক বাস করেন, সেখানে রাশিয়ার প্রভাবও গভীর। তাছাড়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইউক্রেনীয়দের একাংশ হিটলারের নাৎসী বাহিনীকে সমর্থন রুশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।ফলে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলসহ অনেক লোকই রাশিয়ার পক্ষে। যে কারণে বাঁধে যুদ্ধঃ-

১) ইউক্রনের প্রথম সরকার রাশিয়া পন্থী ছিলো, কিন্ত বর্তমান সরকার কৌতুক অভিনেতা ভলোদিমির জেলেনস্কি পশ্চিমা পন্থী।
২) ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য হয়ে পশ্চিমাদেশ ও আমেরিকার ছায়াতলে থাকতে বেশি আগ্রহী।
৩) ন্যাটোর সদস্য হলে রাশিয়ার কর্তৃত্ব শুধু কৃষ্ণ সাগরের তীরবর্তী হবে। ফলে পশ্চিমা বিশ্ব কর্তৃত্ব করবে রাশিয়ার উপর।
৪) রাশিয়ার থাকবে না কোন অভ্যন্তরীণ নৌবন্দর।
৫) রাশিয়া ইউরোপে যে ৫৫% জ্বালানি সরবরাহ করে তার ব্যঘাত ঘটবে।
৬) ডনবাস অঞ্চলে আছে দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক নামে দুটি ভূখণ্ড। এই এলাকার ৩৮ লক্ষ লোক রাশিয়া পন্থী। তাছাড়া এলাকাটি ছিল খনিজ সম্পদ এবং ইস্পাত উৎপাদননের ভারী শিল্পের কেন্দ্র । এখানে কয়লারও বড় মজুত আছে।
৭)দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক – দুটিরই কিছু অংশ কিয়েভের সরকারের নিয়ন্ত্রণে, আর বাকি অংশ রুশ-সমর্থক বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে – যারা এ দুটিকে দুটি আলাদা ‘পিপলস রিপাবলিক’ হিসেবে ঘোষণা করেছে ।

মোটকথা ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য লাভের চেষ্টা এবং আমেরিকার নাচের পুতুল হতে চাওয়ার কারনে রাশিয়ার পার্লামেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বীকৃতি দেবার আহ্বান জানিয়ে এক প্রস্তাব পাস করে। এর পর সোমবার এ দুই অঞ্চলের নেতারা ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি তাদের স্বীকৃতি এবং সামরিক সমর্থন দেবার আহ্বান জানান।এর পরই পার্লামেন্টে ভ্লাদিমির পুতিন আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেবার কথা জানালেন সোমবার রাতের ভাষণে। পরে ইউক্রেন দোনেৎস্ক এবং লুহানস্কের রাশিয়া পন্থী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালালে মস্কো সৈন্য মোতায়েন করে মহড়া করে বেলারুশে। শেষে মস্কো আক্রমন করে ইউক্রেনে।

পুলিশ পরিদর্শক আমিনুল সিমনের ফেসবুক ওয়াল থেকে।
তথ্য সূত্র. রুশ বিপ্লব ইতিহাস

আপনার পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো নিউজ পড়ুন
© All rights reserved © 2021 | Daily Rajbari News
Theme Customized By Uttoron Host